মহাকাশ্যপ এখানে অপেক্ষা করছেন
বুদ্ধের প্রধান শিষ্যদের মধ্যে অন্যতম মহাকাশ্যপ।
সারিপুত্ত আর মোদগল্যায়নের পরেই তাঁর নাম মনে পড়ে। বৌদ্ধদের প্রথম মহাসংগীতিতে নেতৃত্ব
দিয়েছিলেন তিনি। পালি সাহিত্য তাঁর শেষজীবন সম্পর্কে নীরব। কিন্তু হিউয়েন সাং এর ভ্রমণ
বর্ণনায় সে বিষয়ে কিছু কথা লেখা আছে। তিনি বলেছেন মহাকাশ্যপ জীবনের শেষ দিনগুলিতে কুক্কুটাপদগিরি
নামে একটা পাহাড়ে এসেছিলেন এবং এখানেই তিনি রয়ে যান। কিন্তু কোথায় এই কুক্কুটাপদগিরি?
১৯০৬ সালে রাখালদাস বন্দোপাধ্যায় গয়া-কাতরাসগড় রেল পথের
গুরপা স্টেশন থেকে এক মাইল উত্তরের একটি পাহাড়কে কুক্কুটাপদগিরি বলে চিহ্নিত করেন।
এই নিয়ে সেই বছরেই তাঁর একটি লেখা প্রকাশিত হয় বেঙ্গল এশিয়াটিক সোসাইটির জার্নালে।
সে লেখাটি না পড়তে পারলেও বিহার সরকারের অনুকূল্যে প্রকাশিত হিস্টোরিকাল রিসার্চ সিরিজের
চার নম্বর খন্ডে ডি আর পাটিল গুরপা ও তার সংলগ্ন গুহাগুলির যে বিবরণ দিয়েছেন তা আমাদের
খুব উত্তেজিত করেছিল। গুরপা ভ্রমণ করতে হবেই এরকম একটা অদম্য ইচ্ছা নিয়ে বর্ষাকালের
শেষ দিকে বেরিয়ে পড়লাম গয়ার উদ্দেশ্যে।
শেষ বর্ষার
বৃষ্টি ধোয়া জঙ্গলের প্রান্তে গভীর নির্জন একটা স্টেশন গুরপা। আমরা ছাড়া সাকুল্যে আর দু-তিনটি লোক ট্রেন থেকে নামল। লো ল্যান্ড প্ল্যাটফর্ম
বলে একটা কথা ছেলেবেলায় শুনতাম। এর মানে স্টেশনের প্ল্যাটফর্ম থাকবে মাটির সমতলে। আর যাত্রীকে
নামতে গেলে ব্যবহার করতে হবে ট্রেনের দরজায় লাগানো সব শেষ পাদানিটাও। তার পরেও অবশ্য
ঠিক হবে না। একটু শূন্যে ভেসে যেন আছড়ে পড়তেই হবে লাইনের বোল্ডারে। তবেই হবে যথার্থ
অবতরণ। ট্রেন থেকে আমাদের নেমে আসাটা সেই রকম অবতরণ হল। এর অবশ্য অন্য একটা কারনও আছে সেটা হল কাঠ।
শুকনো বড় বড় কাঠের বান্ডিল গাছের বাকলে বেঁধে নিয়ে ট্রেনে উঠেছেন স্থানীয় মহিলা-পুরুষ। সেই বোঝায় ট্রেনের দরজা অবরুদ্ধ।
জানালার বাইরে প্রকৃতি তখন অকৃপণ সৌন্দর্য
মেলে ধরেছে। সেদিকে তাকিয়ে চোখ জুড়িয়ে যাচ্ছিল আমাদের। ট্রেন লাইন বেশ উঁচুতে, তার একদিকে ঠাসা গাছে ঢাকা বিরাট সবুজ বৃষ্টি ধোয়া উপত্যকা
। দূরে নীল অনুচ্চ পাহাড়ের সারি। সেদিক থেকে একটা ছোট নদী বেরিয়ে এসে বয়ে যাচ্ছে লাইনের তলা দিয়ে।
নদীর সেই ব্রিজের উপর আমাদের চোখকে আরেকটু আরাম দেওয়ার জন্যই যেন দাঁড়িয়ে পড়ল ট্রেন।
ওই যে সবুজ বন বীথিকা, দূর দিগন্তের সীমানায়, ছোট্ট নদীটির ওই বাঁকে-
সেই যে গানটা, সেটা এখানে এসে সত্যি হয়ে উঠল।
বহুদিন ধরেই একটা প্যাসেঞ্জার ট্রেন এই কবিতার
পথে রোজ যাতায়াত করে। প্রথমে ট্রেনটির রঙ ছিল আচার দেওয়ার বড় মরিচের মত লাল।
আচারের মরিচ যেমন রোদ লেগে বেশ কালচে বর্ণ হয়,
বহুদিন লাইনের উপরে
চলতে চলতে পানের পিকে আর ধুলোর অত্যাচারে গাড়িটির রঙ ও হয়ে যেত তেমনই পাকা রক্তবর্ণের।
জানালার রড গুলির কোণায় তখনো অবশ্য লেগে থাকত কয়েক ফোঁটা শক্ত হয়ে যাওয়া রঙের বিন্দু।
নতুন রং করার সময়ে যেগুলি মাটিতে পড়তে গিয়েও পড়ে নি। ইচ্ছে হত সেই রঙের ফোঁটা খুঁটে
তুলে বের করে নিই তার ভিতরের তলতলে রঙ।
তারপর একদিন ট্রেনটার রঙ হয়ে গেল ঘিয়ে তাতে
নীল রঙ এর বর্ডার। ট্রেনের নাম হল ‘এম ই এম ইউ’। গুরপা স্টেশনে তখনো কিন্তু আমাদের নামা হল
না। কারন এতদিন আমরা তো ওই ট্রেনটাকে পাত্তাই দিতাম না। আমাদের ছিল আরো দ্রুতগামী মেল
ট্রেন যা অনেক বেশি আরামদায়ক, অনেক সময় সাশ্রয়ী।
সেই সব ট্রেন নাক উঁচু করে গুঝান্ডি,
নাথগঞ্জ, বাঁশকাটওয়া,
গুরপা স্টেশন পেরিয়ে
যেত রাতের অন্ধকারে। তারায় ভরা আকাশের নিচে তখন ঘুমিয়ে থাকত শালজঙ্গল।
অতিমারীতে দূরের সমুদ্রের হাতছানি কাছের শিশিরবিন্দুর
মায়ার কাছে হেরে গেল খানিকটা বাধ্য হয়েই। যে চালগুঁড়োর পিঠে বাড়িতে মুখে তুলতাম না।
প্যাসেঞ্জার ট্রেনের হকারের কাছ থেকে কিনে খেলাম সেটাই। গয়া লাইনের এই পিঠের নাম নারশা।
অনেকটা বড় আকারের তালের বড়ার মত। উপরে তিল ছড়ানো। একটু রুক্ষ আর কম মিষ্টি স্বাদের
হলেও আজ আমাদের সবই ভালো লাগছে। সবুজ শাল পাতায় মুড়ে বিক্রি হচ্ছে ভেজানো ছোলা।
সজীব আর সদ্য অঙ্কূরিত। বাইরের প্রকৃতিও সজীব। আর বিক্রি হচ্ছে রামদানা। এটাও এক রকমের লাড্ডু।
সাদা ফুরফুরে নির্ভার। উপরে দ্বিতীয়ার চাঁদের মত একফালি নারকেল।
গুরপা স্টেশন আসার আগেই ট্রেনের জানালা
দিয়ে দূরে দক্ষিণ পশ্চিম থেকে উত্তর পূর্বে বিস্তৃত নীল পাহাড়ের সারি দেখা গেল।
তার তিনটি চূড়া। সে তিনটির মধ্যে উত্তরপূর্বের চূড়াটিই সবচেয়ে উঁচু। সেটিই আমাদের গন্তব্য।
বইতে লিখেছে চূড়াটির উচ্চতা একহাজার ফুট। এই পাহাড়ের অধিষ্ঠাত্রী দেবী গুরপাসিনি
মাঈ। পাহাড় চূড়ার গোড়ায় ছটি ছোট ছোট ঢিপি আছে। স্থানীয়রা মনে করেন সেগুলি মায়ের দ্বারপাল।
তবে ফা হিয়েন আর হিউ এন সাং দুজনের
বর্ণনাতেই এই পাহাড় কখনো কুক্কুটাপদগিরি কখনো গুরুপদগিরি। কুক্কুটাপদগিরি মানে মুরগির
পায়ের মত দেখতে পাহাড়। মুরগির পায়ের মতই তিন ভাগে বিভক্ত। আবার গুরুপদগিরি মানে যে
পাহাড়ে গুরুর পায়ের ছাপ আছে। এই শব্দই হয়ত গুরপা শব্দটির উৎস। পাহাড়ের উপরে সত্যি সত্যিই
খুব বড় দুটি পায়ের পাথুরে ছাপ আছে। হিন্দুরা বলে সেটি ভগবান বিষ্ণুর পদচ্ছাপ। আর আছে
একটি সোনালি স্তুপ। আরো একজন আছেন। তিনি মহাকাশ্যপ। তাঁকে দেখা যায় না।
হিউয়েন সাং জায়গাটার যে বর্ণনা দিয়েছেন
তার সঙ্গে মিলিয়েই মূলত পাহাড়টিকে শনাক্ত করা গেছে। ৬৩০ খ্রীস্টাব্দের কাছাকাছি সময়ে তিনি ভারতে
আসেন। মনে হয় তখন এই
জায়গাটি বৌদ্ধ তীর্থযাত্রীদের কাছে বেশ বিখ্যাত ছিল। ৬৩৩ সালে কাশ্মীরে বসে তিনি
খ্রীস্টপূর্ব প্রথম শতকে হওয়া প্রথম বৌদ্ধ সংগীতির ব্যাপারে লিখেছেন। এই বৌদ্ধ
সংগীতির প্রধান তত্বাবধায়ক হিসেবে মহাকাশ্যপ নিশ্চই খুবই পরিচিত আর শ্রদ্ধেয় ছিলেন
তখনও।
সারিপুত্ত আর মোদগল্যায়নের পরেই বুদ্ধ যাঁকে
দীক্ষা দিয়েছিলেন তিনি পিপ্পলি। পরে তাঁরই নাম হয়ে গেল মহাকাশ্যপ। পিপ্পলি ব্রাহ্মণসন্তান।
বাবার নাম কপিলা আর মায়ের নাম সুমনা দেবী, আর তাঁদের গ্রামের নাম মহাতীত্থ। মহাতীত্থ
নিছক একটা গ্রাম মনে হলেও ষোলটি এইরকম গ্রাম কিনেছিলেন কপিলা আর ছোটখাটো একজন রাজাই
যেন হয়ে উঠেছিলেন। মহাকাশ্যপের ছোটোবেলাটাও তাই প্রাচুর্যের মধ্যে কেটেছিল।
গুরপা থেকে গয়া সড়ক পথে মাত্রই পঞ্চাশ কিলোমিটার।
রেল পথে ছটা ছোট স্টেশন। আগে গয়ার নাম ছিল উরুবেলা। বরাবরই শান্ত জায়গা। ভগবান বুদ্ধ
প্রথমে তাই উরুবেলার কাছে সেনানী গ্রামে কঠোর তপস্যা শুরু করেছিলেন। তারপর যখন
কঠোরতার বিষয়ে মত পরিবর্তন করলেন তখনও আবার সেই উরুবেলার কাছেই বোধিবৃক্ষের নিচে সাধনায়
বসলেন। গুরপা স্টেশনেও একটি পিপুল গাছ আছে। পাহাড়ে উঠতে গেলে সেই পিপুল গাছের তলা দিয়ে
গেরুয়া মাটির রাস্তা ধরতে হয়।
আকাশ আজ মেঘলা। গুমোট গরম। কয়েকটি তাল গাছ
হলুদ মাটির রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে আছে। কয়েকটা খেজুর গাছও আছে। মাটির রাস্তাটা এক
মাইল সমতলে গড়িয়ে গিয়ে ধাক্কা খেয়েছে পাহাড়ে। জঙ্গলও শুরু হয়েছে ওই পাহাড়ের গোড়া থেকে।
পিঠে বোঝা নিয়ে চলতে শুরু করলাম সমতল রাস্তায়।
খানিকটা অন্যমনস্ক হয়ে ভাবতে লাগলাম কত পুরোনো হলুদ এই রাস্তা, এই ধোঁয়া ধোঁয়া পাহাড়।
হিউয়েন সাং যে বর্ণনা দিয়েছিলেন তা নাকি হুবহু মিলে গেছিল এই জায়গাটার সঙ্গে। এত
বছর পরেও কোনো পরিবর্তন হয়নি। বহুদিন আগেই ভারত থেকে বৌদ্ধধর্ম মুছে গেছিল। তীর্থযত্রীর
স্রোতে ভাঁটা পড়েছিল। এখনও শুধুমাত্র জাপান ও এশিয়ার কিছু দেশের বৌদ্ধরাই এখানে
তীর্থ করতে আসেন। নকশাল অধ্যুষিত হওয়ায় বাকি ভারতীয়রা জায়গাটিকে এড়িয়ে চলেন।
ছোট থেকেই পিপ্পলি ঠিক করেছিলেন সাধু হবেন।
কিন্তু তাঁর বাবা মার ইচ্ছে ছিল অন্যরকম। তাঁরা পিপ্পলিকে চাপাচাপি করতে লাগলেন যেন
সে বিয়ে করে সংসারী হয়। অবশেষে অতিষ্ট হয়ে পিপ্পলি অপরূপ এক নারী মূর্তি গড়লেন আর সোনা
দিয়ে তাকে মুড়ে দিলেন। এবার সেটিকে দেখিয়ে বললেন এইরকম নিঁখুত সুন্দর মেয়ে পেলে তবেই
বিয়ে, নচেৎ নয়। পিপ্পলির মা বললেন তাই হবে। আর
তাঁর বাবা, বাছা বাছা আট জন ব্রাহ্মণ ডেকে এনে মূর্তিটি তাদের দিয়ে বললেন ঠিক এইরকম
একটি কন্যে যোগাড় করতে হবে। রাহা খরচের টাকা পয়সা নিয়ে ব্রাহ্মণরা ছড়িয়ে পড়লেন দেশের
আনাচে কানাচে।
অল্প হেঁটে একটি শিবমন্দির এল। তার মুখোমুখি
ছোট একটা একতলা বাড়ি। মাঝে মধ্যে সেখানে থাকেন অশোক রায় নামে একজন। রাখী পূর্ণিমার
সময় সম্পূর্ণ নিজের খরচায় তিনি একটা লঙ্গর চালান। কারো থেকে অনুদান নেন না। ওই সময়ে
একটা মেলা বসে। বহু হিন্দু পুণ্যার্থী সারি দিয়ে পাহাড়ে চড়েন। বিরাট বড় লাইন পড়ে।
বছরের বাকি সময়টা লোকজন তেমন আসেনা। বৌদ্ধরা আসেন শীতকালে। কোনো দিন দুপুরে তাঁর লঙ্গরখানার সামনের
ছোট মাঠ তখন গাড়িতে গাড়িতে ভরে যায়।
মন্দির পেরিয়ে ছোট্ট একটা জোড় (সরু
জলধারা)। পাথরের সাহায্যে সেটা টপকে মূল রাস্তায় উঠে এলাম। কিছুদূর গেলে রাস্তার
দু পাশে দুটি বড় পুকুর। পুটুস গাছের সবুজ পাতা আর ছোট ছোট লাল-গেরুয়া-সাদা ফুলে তাদের
চারিদিক ঢাকা। যেন কেউ টুনি লাইট জ্বালিয়ে রেখেছে গাছে। পুকুরেরে কালো জলে পাহাড়ের
তিনটি চূড়ার ছায়া পড়েছে। এক ঝলক শীতল হাওয়া বয়ে গেল।
পিপ্পলির বাবার কাছ থেকে টাকা পয়সা আর
সোনালি সুন্দরী কন্যের মূর্তি নিয়ে ব্রাহ্মণরা বহুদূরে চলে গেলেন। এসে পৌঁছালেন সাগল-এ।
সাগল হল এখনকার সিয়ালকোট। এ পর্যন্ত তাঁদের মূর্তির মত অসম্ভব নিখুঁত সুন্দরী
কাউকে খুঁজে পাননি তাঁরা। অপরাহ্নে সাগলে পৌঁছে একটা পুকুরে স্নান সেরে ফেরার পথে দেখলেন ভদ্রা কপিলানীকে। কপিলানী সুন্দরী।
ব্রাহ্মণদের কাছে যে সোনায় মোড়া মূর্তি আছে তা শিল্পীর কল্পনায় গড়া। যথাসম্ভব
নিখুঁত। কিন্তু কপিলানী তার থেকেও সুন্দরী তার থেকেও নিখুঁত। কপিলানীর বয়স তখন ষোলো। পিপ্পলির থেকে
চার বছরের ছোট আর তার বাবাও অর্থবান ব্রাহ্মণ।
গুরপা পাহাড় ক্রমশ কাছে এগিয়ে আসতে লাগল।
পাহাড়ের গায়ে লেগে থাকা বর্ষাকালের ঘন সবুজ জঙ্গল আমাদের মনে সম্ভ্রমের উদ্রেক
করল, সেই সঙ্গে তার উচ্চতাও। একেবারে চূড়ার দিকে তাকালে বিরাট আকারের ন্যাড়া একটা
পাথর দেখা যায়। কালচে ধূসর সেই পাথরের উপরে এই মেঘলা দিনেও জ্বলজ্বল করছে সোনালি
অর্ধগোলাকার স্তুপ।
পিপ্পলির নজরও ছিল সংসারের চাওয়া পাওয়া
কামনা বাসনার ঊর্ধে। বিবাহ না করার জন্য তাঁর প্রথম যে চেষ্টা সেটা ব্যর্থ হল
কপিলানীকে খুঁজে পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে। এবার তিনি একটি চিঠি লিখলেন ভাবী কনেকে। লিখলেন
বিবাহে তিনি নিতান্ত অনিচ্ছুক, ভদ্রার যদি অন্য কাউকে পছন্দ থাকে তাহলে স্বচ্ছন্দে
সে তাকে বিবাহ করতে পারে, এতে বরং খুশিই হবে পিপ্পলি। আশ্চর্যের ব্যাপার হল যে
অনুরূপ একটি চিঠি ভদ্রাও লিখলেন পিপ্পলিকে। একই তার বয়ান- পিপ্পলি যদি চান বিবাহ
করতে পারেন আর কাউকে, যাঁকে ভালো লাগে তাঁর। ভদ্রা তো সাধারণ মেয়ে নন, তাঁর যে আসল
ইচ্ছে সন্ন্যাসিনী হওয়ার। কিন্তু তাদের এ পরিকল্পনাও ব্যর্থ হল। চিঠি দুটি পড়ল দুই
বাড়ির অভিভাবকের হাতে। তাঁরা চিঠির খোলনলচে বদলে লিখলেন নকল দুটি চিঠি। সে দুটির
ভাষায় শুধু প্রেম, পরষ্পরের প্রতি মুগ্ধতার নকল বিবরণ।
বিয়ের বাঁধনে বাঁধা না পড়ার সম্ভাব্য সব
চেষ্টা বিফলে গেল। হলদে সবুজ পাতার উপর থেকে একটা প্রজাপতি খুব দ্রুত উড়ে গিয়ে
জঙ্গলের অন্ধকারে মিলিয়ে গেল। ছবি তুলতে গিয়ে দেখলাম ধরা পড়েছে শুধু প্রজাপতির
রঙ্গীন পাখনার দ্রুতসঞ্চারের ঝাপসা একটা রেখা। মাকড়সার জালের নিচে লাল বুনো ফুল
ফুটে আছে। তার একটু উপরে সিমের মত ফল। বুনো ফুলগুলির কোনো সুবাস নেই শুধু উজ্জ্বল
থেকে উজ্জ্বলতর হয়ে উঠছে তাদের রঙ।
ফুলশয্যার রাত্রে কোনো আড়াল ছিলনা
পিপ্পলি আর ভদ্রা কপিলানীর মধ্যে। কোনো অভিভাবকের নকল প্রণয় সম্ভাষনের গোছানো ভাষার মিথ্যেও
ছিলনা । সেই রাতে আকাশে হয়ত তারা ছিল। পিপ্পলির বাড়ির অদূরে তাদের চাষের ক্ষেতের প্রান্তে শালগাছের গভীর জঙ্গল তারার আলোয় হয়ত ভিজে
যাচ্ছিল। আজ প্রথম রাত। বিছানায় শুভ্র চাদরের উপর পিপ্পলি একটি সুগন্ধী ফুলের মালা
রাখল। মালাটির দুপাশে দুটি সুন্দর কাজ করা বালিশ। নিভাঁজ দাগহীন। দুটি বালিশের
মাঝখানে সেই মালাটিকে শুইয়ে রেখে পিপ্পলি আর ভদ্রা কপিলানী পরষ্পরকে বলল- এই রইল
মালা, আমাদের শয্যার ঠিক মাঝামাঝি। এর দুইপাশে আমরা দুজনে শোব রোজ। যদি কামার্ত
হয়ে কোনো দিন পরষ্পরের দিকে পাশ ফিরি, যদি আমাদের শরীরের সেই চাপে দলিত হয়ে যায়
মালার একটিও ফুল তবে বুঝব আমাদের ইচ্ছেয় কোনো ফাঁক আছে, এ জীবনে নিজেদেরকে ঈশ্বরের
কাছে সমর্পণ আর তবে হল না। ফুলের মালাটি গন্ধ ছড়িয়ে দিতে লাগল। ততদিন তারা
পাশাপাশি শুল, যতদিন পিপ্পলির বাবা মা বেঁচে রইলেন। মালার একটি ফুলও দলিত হল না।
অনেক উপর থেকে আমরা ফেলে আসা পৃথিবীর
মাটির দিকে তাকালাম। সেদিকে দুটি কালো জলের পুকুর দুটি করুণ চোখের মত তাকিয়ে আছে।
তাদের মাঝখান দিয়ে চলে গেছে সরু সিঁথির মত একফালি মাটির রাস্তা। কোনো সিঁদুরের দাগ
তাতে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।
গুরপা পাহাড়ের পেটের মধ্যে আমারা সেঁধিয়ে
গেছি। যেন কচি সবুজ গাছপালায় ঢাকা বিরাট একটা সুড়ঙ্গ। কচি বাঁশের তীক্ষ্ণ পাতা
গায়ে এসে লাগছে। মাঝে মাঝে যখন জঙ্গলের পাতা একটু অবকাশ দিচ্ছে, সেই ফাঁক দিয়ে
দেখতে পাচ্ছি দূরের সবুজ বনাঞ্চল, ঢেউ খেলানো পাহাড়। আমাদের মন জুড়িয়ে যাচ্ছে। তবে
বাতাস অসম্ভব আর্দ্র। ঘামে শরীর ভিজে যাচ্ছে। সেইসঙ্গে আছে খাড়া সিঁড়ি ভেঙে ওপরে
ওঠার কষ্ট। সিঁড়ির পাশে পাশে শক্ত বড় বড় পাথর। তার উপরে লতাপাতার ঝোপ। পাথরের উপর
দিয়েই শিকড় নামিয়ে মাটি খুঁজছে একটু বড় একটা গাছ। একটা বড় শিকড় এরকমই দুটি পাথরের
মাঝখান দিয়ে নেমে এসেছে যেন হাতির শুঁড়। দুদিকের প্রকান্ড কালো পাথর দুটি যেন তার
কান। অনেক্ষণ তাকে আমরা দেখতে থাকি, যতক্ষণ না সে জীবিত হয়ে আমাদের কাছে তার
অতীতের গল্প বলে।
পিপ্পলির বাবা মা বৃদ্ধ হলেন। পৃথিবী
ছেড়ে তাঁদের যাওয়ার সময় হল। যতদিন তাঁরা জীবিত ছিলেন ততদিন পিপ্পলি আর ভদ্রা
কপিলানী তাঁদের সেবা করেছিলেন। বাবা আর মার মৃত্যুর পরে তাঁদের বিশাল সম্পত্তির
দেখভালের দায়িত্ব এসে পড়ল পিপ্পলির উপর। একদিন তিনি চাষের ক্ষেতে লাঙ্গল দেওয়া
দেখছিলেন। লাঙ্গলের ফলার আগায় উঠে আসছিল মাটির ভেতরে লুকিয়ে থাকা ছোট ছোট পোকা আর তাদের
খাবার জন্য ভিড় জমিয়েছিল হাজারো চড়াই। বিদ্যুৎচমকের মত পিপ্পলির মনে হল তিনি নিজেও
তো ওই চড়াই এর মত। অপরের শ্রমের অপহরণ করে তাদের শোষণ করে বেঁচে আছেন। জমিদারের যা
ভোগ্য বলে লোকে জানে তার কোনোটাই তো স্বোপার্জিত নয়। তাঁর অন্নে তবে লেগে আছে
গরীবের রক্ত। তিনি চাষি কে জিজ্ঞেস করলেন এই যে এতসব পোকা মরছে এই কর্মের ফল কাকে
বহন করতে হবে? চাষি সরল ভাবে বলল- আপনাকে।
পিপ্পলি সন্ন্যাসী হওয়ার দিকে এক পা
এগোলেন। ভাবলেন অপরের রক্তজল করা শ্রম ভাঙিয়ে বড়লোক না হয়ে সন্ন্যেসী হওয়া ভাল। এইসব সম্পত্তি ভদ্রা
কপিলানী কে দিয়ে গৃহত্যাগ করা যাক। কিন্তু ভদ্রাও বাড়ির উঠোনে শস্যবীজ শুকোতে দিতে গিয়ে একই দৃশ্য প্রত্যক্ষ করলেন। তাঁর মনেও তখন গৃহত্যাগের বাসনা। অতএব দুজনেই বেরিয়ে
পড়লেন একসঙ্গে। বেরোবার আগে একে অপরের মাথার সব চুল কেটে দিলেন আর একটিমাত্র হলুদ
বস্ত্র কিনলেন নিজেদের জন্য। যেরকম তখনকার দিনের সন্ন্যাসীরা পরতেন। গ্রামের সব লোক কত বোঝানোর চেষ্টা করল তাঁদের,
কত অশ্রুজল ফেলল, কিন্তু তাঁরা এগিয়ে চললেন।
জঙ্গলের ভিতর থেকে বেরিয়ে এল দুটি ছেলে। তারা বাঁশের কোঁড় সংগ্রহ
করছে খাবার জন্য। একটা সরু বাঁশের কঞ্চি তারা দিল আমাদের। উপরে উঠতে যদি লাগে।
তারপর পয়সা চাইল। একজন ঈষৎ অপ্রকৃতিস্থ মানুষ হঠাৎ জঙ্গলের একদিক থেকে বেরিয়ে এসে
অন্যদিকে মিলিয়ে গেল। কোথাও গরু নেই, কিন্তু সিঁড়ির উপর গোবর পড়ে আছে। এত কষ্ট করে
গরুগুলি এখানে গাছপাতা খেতে আসে? ক্রমশ উঠতে লাগলাম ওপরে। রাস্তা একটিই। বাকিটা
আপাতত দুর্ভেদ্য জঙ্গল।
আগে আগে চলেছেন পিপ্পলি ঈষৎ তফাৎ রেখে
তাঁর অনুগমন করছেন ভদ্রা কপিলানী। রাস্তাটা একসময় দুভাগে ভাগ হল। সেই বিভাজনের
মুখে দাঁড়িয়ে পিপ্পলি বললেন আমরা তো এখন সন্ন্যাসী কিন্তু আসলে তো স্বামী স্ত্রী।
যদি সন্ন্যাস জীবনেও আমরা একসঙ্গে থাকি লোকে বলবে এরা গার্হস্থ জীবনকে সম্পূর্ণ ত্যাগ
করতে পারেনি। অতএব এবার আমাদের চির
বিচ্ছেদের সময় এসেছে। রাস্তার এই মোড় থেকে আমরা দুজন দুদিকে যাই। ভদ্রা কপিলানী
বললেন তাই হোক। দুটি জীবন দুটি রাস্তা ধরল। কিন্তু আসলে তাঁদের তো একটিই পথ। সে পথ
বুদ্ধের পথ। তাই একে একে তাঁরা বুদ্ধের শরন নিলেন আলাদাভাবে। পিপ্পলির নাম হল মহাকাশ্যপ। ভদ্রা
কপিলানী কিন্তু তাঁর পুরোনো নামেই রইলেন মেয়েদের বুদ্ধ সঙ্ঘে।
জঙ্গলের রাস্তাটা শেষ হয়ে খুব উঁচু আর
বিরাট বিরাট বাদামী পাথরের রাজ্যে এসে ঢুকে পড়ল। প্রকান্ড প্রকাণ্ড পাথরের পাশ
দিয়ে আমরা একটা সরু সুড়ঙ্গের কাছে এসে থামলাম। ডি আর পাটিল তাঁর বইতে লিখেছেন গুরপাসিনি
মাঈ এর প্রহরীদের ঢিপির কাছেই জঙ্গলে ঢাকা একটা সুড়ঙ্গের মুখ আছে। তার ভিতরে কিছুদূর
যাওয়ার পরে পথ দুটি ভাগে বিভক্ত হয়ে যায়। একটি রাস্তা খানিকটা নিচে নেমে যাওয়ার
পারেই বিশাল পাথরের খাঁজে অবরুদ্ধ। আরেকটি রাস্তা উত্তরপূর্বে এগিয়ে গেছে। সেই পথে
আঠাশটি পাথরের সিঁড়ি। এই রাস্তাটি একটা উঁচু পাথরের চাতালের উপরে শেষ হয়। সেই
চাতালের একদিক প্রাকৃতিক ভাবেই ঢালু হয়ে মাত্রই ৮ ফুট দৈর্ঘ্য আর ৫ ফুট প্রস্থের
একটা ছোট্ট জলাধারের সৃষ্টি করেছে। এই পাথরের জলাধারের মধ্যে একটি বড় পাথরের নিচে
একটা ছ ফুটেরও বেশি লম্বা কঙ্কাল পাওয়া গেছিল বলে মনে করা হয়। এসব ছাড়িয়ে আরো উপরে
উঠে আরেকটি সুড়ঙ্গ পাওয়া যাবে। সুড়ঙ্গটি দুটি পাথরের পরস্পরের দিকে ঝুঁকে থাকার
ফলে স্বাভাবিক ভাবে তৈরি। সেটা পার করে আরেকটি প্রায় ৫০০ফুট উঁচু পাথরের চত্বর । তাতে
ওঠার জন্য পাথরের উপরেই সিঁড়ি করা আছে। সিঁড়ি পথে উপরে গেলে বিশাল স্তুপটির
পাদদেশে পৌঁছানো যায়। সেখানে অনেক গুলি বুদ্ধের মূর্তি সম্বলিত ছোট ছোট পাথরে তৈরী
স্তুপের অনুকৃতি দেখলাম। কিছু সিঁদুর মাখানো অলঙ্কৃত শিলাও রয়েছে। আর রয়েছে তিনটি
হিন্দু মন্দির। তার একটিতে রয়েছে পাথরের বড় পায়ের ছাপ। গুরুপদ।
পাহাড়ের চূড়াটি খাড়া হয়ে দাঁড়িয়ে থাকা
একটি প্রকান্ড পাথর। তার উপরে সোনালী স্তপ। সেখান থেকে বিপুলা পৃথিবীর শোভা অপরূপ।
বিহা্রের সীমা ছাড়িয়ে জঙ্গল চলে গিয়েছে রাঁচির দিকে। সবুজ সবুজ পাহাড়ের ঢেউ। তার
উপর আলোছায়া। স্তুপের পাদদেশে দাঁড়িয়ে মনে হয় আমরা যেন কোনো জাহাজের ডেকে দাঁড়িয়ে
দেখছি পায়ের তলায় জলরাশি। ছোট ছোট টিলার গায়ের সঙ্গে লেগে থাকা বনভূমির তরঙ্গ যেন সমুদ্রের
ছোট ছোট ঢেউ।
ভদ্রা কপিলানীর সঙ্গে বিচ্ছেদের পর
মহাকাশ্যপ বুদ্ধের কাছে এলেন। সেইসময় ভূমিকম্প হল। বুদ্ধদেব বুঝলেন এ সাধারণ মানুষ
নয়। শোনা যায় মহাপুরুষের শরীরের বত্রিশ লক্ষণের মধ্যে সাতটি ছিল মহাকাশ্যপের দেহে।
একবার বুদ্ধ উন্মুক্ত প্রস্তরখন্ডে বসতে গেলে মহাকাশ্যপ তাঁর চীবর (ভিক্ষুর পোষাক)
মাটিতে বিছিয়ে দিলেন। তৎক্ষনাৎ বুদ্ধদেব তাঁর নিজের চীবরটি খুলে মহাকাশ্যপকে দিলেন
আর মহাকাশ্যপের চীবরটি নিজে পরে নিলেন। কেবল একটিমাত্র শিষ্যের সঙ্গেই বুদ্ধের এই
চীবর বদল হয়েছিল।
আর মনের অনুভূতির বদলের কথা বলি, যদি শরীরের নৈকট্যের স্মৃতিকে ঘিরে নারী-পুরুষের যে মন গড়ে ওঠে তার বাইরেও ঐশী আসঙ্গের স্মৃতি বলে সত্যিই যদি কিছু হয়, তবে সে সঙ্গের স্মৃতিসুধায় নিশ্চই ভিজেছিলেন ভদ্রা কপিলানীর আর মহাকাশ্যপ দুজনেই। ভদ্রা বহুদিন পরে একটি কবিতা লেখেন মহাকশ্যপকে নিয়ে। তার শেষ শ্লোকটি –
“সংসারের
দৈন্যতায় উভয়ে প্রব্রজ্যা গ্রহণ করিয়াছি
উভয়ে আমরা আসবহীন দমিত
উভয়েই শান্ত পরমমুক্তি জ্ঞাত”
কবিতাটি ক্ষুদ্দকনিকায়ের থেরীগাথায় চিরস্থায়ী হয়ে আছে ওই একখানি মালার মত। যে মালা গন্ধ ছড়ায় ভালবাসার। শুধুই শরীরের চাহিদার স্থূলতার দিকে পাশ ফিরে শোওয়ার ইচ্ছের কাছে প্রহরী হয়ে দাঁড়ায় বারবার। আর আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয় মহাকাশ্যপ আর ভদ্রা কপিলানীর সন্ন্যাসী হওয়ার পুর্ব মূহুর্তের ঘটনাটি। ফসলের ক্ষেতে চড়াইপাখির পোকা খাওয়ার সেই দৃশ্যের নির্যাস- অপরের শ্রমে বেঁচে থাকার চতুর ইচ্ছেকে পরাস্ত করাই সকলে মিলে বেঁচে থাকার উপায়।
বাকি
জীবন নির্জনে ধ্যানে কাটানোর ইচ্ছে নিয়ে মহাকাশ্যপ দেখা করতে গেলেন রাজা
অজাতশ্ত্রুর সঙ্গে। দ্বারপাল ভাগিয়ে দিল তাঁকে। রাজা বিশ্রামে। এ সময়ে রাজাকে
বিরক্ত করা সম্ভব নয়। মহাকাশ্যপের কোনো অভিযোগ নেই। তিনি এলেন গুরপা পাহাড়ে। তাঁর
যাওয়ার পথ করে দিতে তিন পাহাড়ের চূড়া বিভক্ত হয়ে গেল। মহাকাশ্যপ টুকরো হয়ে যাওয়া
পাহাড়গুলির উপর বিছিয়ে দিলেন সবুজ ঘাস। তারপর একটা গুহায় বসে রইলেন ধ্যানে। পরনে
তাঁর ভগবান বুদ্ধের সেই চীবর আর তাঁরই দেওয়া ভিক্ষাপাত্র। এর পরেও অজাতশ্ত্রু
ভিক্ষু আনন্দকে নিয়ে গুরপা পাহাড়ে দেখা করতে এসেছিলেন মহাকাশ্যপের সঙ্গে। দ্বারপাল
মহাকাশ্যপকে বড় অপমান করেছেন যে। মহাকাশ্যপ এসবের ঊর্ধে। তিনি যোগবলে তাঁর দেহকে
চিরস্থায়ী করে রাখলেন এই পাহাড়েরই কোনো এক গুহায়। আমরা তাঁর দেখা পেলাম না আর।
কিন্তু সবাই জানে এমনকি বিশ্বাস করে তিনি অপেক্ষায় আছেন। কোনোদিন আরেকজন বুদ্ধ
আসবেন হিংসায় উন্মত্ত পৃথিবীতে, তাকে তিনি দেবেন বুদ্ধদেবের চীবর আর তাঁর
ভিক্ষাপাত্র।
মহাকাশ্যপ ভগবান বুদ্ধের জ্ঞানের রক্ষাকারী হয়ে বসে আছেন এই গুরপা পাহাড়ে। তাঁর অপেক্ষা অন্তহীন। কিন্তু তিনি নিজে তা নিশ্চই মনে করেন না। তাঁর আছে আশা। বুদ্ধের মত একজন মানুষ একদিন আসবেনই। তাকে ভিক্ষুর পোশাক পরিয়ে হাতে ভিক্ষাপাত্রটি না তুলে দিলে যে তাঁর মুক্তি নেই।
· ভদ্রা কপিলানীর কবিতাটির অনুবাদ সাধনকমল চৌধুরীর। ‘থেরীগাথা’ বই থেকে নেওয়া।
ছবি তোলার ছলে ক্লান্তি অপনোদন
দেবতা
চূড়ায় উঠে চারিদিকের ছবি
আগে পড়েছিলাম, আবার পড়লাম ।আবার মুগ্ধ। এত সুন্দর করে ইতিহাস আর বর্তমানের চলাচল যে কি বলব !
উত্তরমুছুন